কেন ময়নাতদন্ত হয়নি ভারতের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর (Lal Bahadur Shastri) :শাস্ত্রীর মৃত্যুর আড়ালে লুকিয়ে থাকা প্রশ্নগুলো

Was Lal Bahadur Shastri’s death normal or doubtful?

১৯৬৬ সালের ১১ জানুয়ারি, মধ্যরাতে সোভিয়েত রাশিয়ার তাশকন্দের (Tashkent)এক নির্জন হোটেল কক্ষে ঘটে যায় এমন একটি ঘটনা, যা আজও ভারতীয় ইতিহাসের সবচেয়ে রহস্যময় অধ্যায়গুলির একটি। ভারতের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর (Lal Bahadur Shastri) আকস্মিক মৃত্যু যেন এক ধাঁধা, যার উত্তর খুঁজে পাওয়া আজও অসম্ভব। তাঁর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিয়ে বিতর্ক চলতে চলতে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব, রাজনৈতিক লাভ-ক্ষতির বিশ্লেষণ, এবং আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ চাপের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। আমরা এখানে সেই রাতের ঘটনাপ্রবাহ, শাস্ত্রীর অবদান, এবং তাঁর মৃত্যুর পর ভারতের ভবিষ্যতের ওপর এর প্রভাব নিয়ে বিশদ আলোচনা করব।

Lal Bahadur Shastri

লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর (Lal Bahadur Shastri) সংক্ষিপ্ত জীবনচরিত: এক জনসাধারণের নেতার উত্থান

লাল বাহাদুর শাস্ত্রী (Lal Bahadur Shastri) ১৯০৪ সালের ২ অক্টোবর, উত্তর প্রদেশের মুঘলসরাইতে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে পিতৃহারা এই বালক দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে বড় হন। কাশী বিদ্যাপীঠ থেকে পড়াশোনা শেষে তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগ দেন এবং মহাত্মা গান্ধীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হন।
শাস্ত্রী ( Lal Bahadur Shastri) ছিলেন সততা, ন্যায় এবং সাধারণ মানুষের কল্যাণে নিবেদিত প্রাণ। ১৯৬৪ সালে জওহরলাল নেহরুর মৃত্যুর পর প্রধানমন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত হয়ে তিনি কৃষি ও প্রতিরক্ষা খাতে ব্যাপক সংস্কার করেন। “জয় জওয়ান, জয় কিষাণ” স্লোগান আজও তাঁর এক উজ্জ্বল স্মৃতি।

তাশকন্দ চুক্তি: এক বিতর্কিত শান্তি উদ্যোগ

১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পরে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমানোর জন্য তাশকন্দ চুক্তি (Tashkent Agreement) স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি ও সম্পর্ক পুনঃস্থাপন নিশ্চিত হয়েছিল।
চুক্তির মূল পয়েন্টগুলি:
• যুদ্ধপূর্ব অবস্থা পুনঃস্থাপন।
• দুই দেশ তাদের সেনা প্রত্যাহার করবে।
• উভয় দেশ শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে।
এই চুক্তি নিয়ে শাস্ত্রী অনেক প্রশংসা অর্জন করলেও, তাঁর কিছু সমালোচক মনে করেন, তিনি ভারতের কৌশলগত কিছু সুবিধা ছেড়ে দিয়েছিলেন। এই বিতর্ক চুক্তির প্রেক্ষাপটকে আরও জটিল করে তোলে।

মৃত্যুর ঘটনাপ্রবাহ: স্বাভাবিক নাকি পরিকল্পিত?

তাশকন্দ চুক্তির (Tashkent Agreement) ঠিক একদিন পর, মধ্যরাতে শাস্ত্রী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁর সরকারি মৃত্যুর কারণ হিসেবে হৃদ্‌রোগকে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু পরিবারের সদস্য এবং কিছু ঘনিষ্ঠ সহযোগীর মতে, শাস্ত্রীর মৃত্যু কোনও স্বাভাবিক ঘটনা নয়।
গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন:

  1. ময়নাতদন্তের অনুপস্থিতি:
    শাস্ত্রীর দেহে ময়নাতদন্ত করা হয়নি। কেন এই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ এড়িয়ে যাওয়া হয়েছিল, তা আজও অজানা।
  2. নীল চিহ্ন ও শারীরিক অস্বাভাবিকতা:
    শাস্ত্রীর মুখ ও শরীরে কিছু অস্বাভাবিক চিহ্ন দেখা গিয়েছিল। এই চিহ্নগুলি বিষক্রিয়ার সম্ভাবনার দিকে ইঙ্গিত করে।
  3. ব্যক্তিগত চিকিৎসকের অভাব:
    শাস্ত্রীর সফরে তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন না। কেন তাঁকে সঙ্গে নেওয়া হয়নি, তা নিয়েও সন্দেহ রয়ে গেছে।
  4. খাদ্যে বিষক্রিয়া:
    মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগে শাস্ত্রী দুধ পান করেছিলেন, যা বিষাক্ত হতে পারে বলে দাবি করেন তাঁর স্ত্রী ললিতা শাস্ত্রী।

লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর (Lal Bahadur Shastri) মৃত্যু ঘিরে সবচেয়ে বড় প্রশ্নগুলোর একটি হলো, কেন তাঁর ময়নাতদন্ত (Postmortem) করা হয়নি, বিশেষ করে তিনি যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এবং তাঁর মৃত্যু ভারতের বাইরে, তাশকন্দে ঘটেছিল। এটি শুধু রহস্যময় নয়, বরং এটি নানা ষড়যন্ত্র তত্ত্বকে উসকে দিয়েছে।

এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় কেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় উঠে এসেছে,জেনে নিন বিস্তারিত!

ময়নাতদন্ত না করার সম্ভাব্য কারণগুলি

১. কূটনৈতিক চাপ ও দ্রুত সিদ্ধান্ত:
শাস্ত্রীর মৃত্যু সোভিয়েত ইউনিয়নের (Soviet Union)তাশকন্দে ঘটে, যেখানে তিনি তাশকন্দ চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য উপস্থিত ছিলেন। সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ভারতের মধ্যে তৎকালীন কূটনৈতিক পরিস্থিতি এমন ছিল যে, সোভিয়েত কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দ্রুত সমাধা করতে চেয়েছিল। তারা হয়তো চেয়েছিল না যে, ময়নাতদন্তের মতো দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় কোনো বিতর্ক তৈরি হোক, যা আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
২. পরিবারের চাপ বা অনুরোধ:
লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর পরিবার দাবি করেছিল যে, তাঁর মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। তবে সেই সময় তৎকালীন সরকারের তরফ থেকে ময়নাতদন্তের প্রয়োজনীয়তা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়নি। সম্ভবত, পরিবারের তরফ থেকেও যথাযথ চাপ দেওয়া হয়নি বা তাঁদের কথা গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।
৩. সরকারি উদাসীনতা:
শাস্ত্রীর মৃত্যুর পরে ভারতের তৎকালীন সরকার এমন কিছু পদক্ষেপ নেয়, যা আজও প্রশ্নবিদ্ধ। ময়নাতদন্ত না করা সেই উদাসীনতারই একটি উদাহরণ। ভারতের মতো একটি গণতান্ত্রিক দেশে প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যু ঘটলে সেটির পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু কেন তা হয়নি, তা আজও অজানা।
৪. ষড়যন্ত্র ঢাকার চেষ্টার সম্ভাবনা:
কিছু ষড়যন্ত্র তত্ত্ব মতে, শাস্ত্রীর মৃত্যুর পেছনে হয়তো বড় কোনো আন্তর্জাতিক বা অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্র কাজ করছিল। যদি ময়নাতদন্ত করা হতো, তবে সেই ষড়যন্ত্রের কিছু প্রমাণ বেরিয়ে আসতে পারত। এটি ঢাকতেই হয়তো ময়নাতদন্ত করা হয়নি।
৫. তৎকালীন প্রথাগত অভাব:
১৯৬৬ সালের সেই সময়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে এমন ঘটনার পর ময়নাতদন্তের মতো বিষয়গুলো নিয়ে সেভাবে মানদণ্ড তৈরি ছিল না। হয়তো সোভিয়েত ও ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তেমন গুরুত্ব দেয়নি।

লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর (Lal Bahadur Shastri) মৃত্যুর মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার যথাযথ তদন্ত এবং ময়নাতদন্ত হওয়া উচিত ছিল। এটি না হওয়া কেবল তাঁর পরিবারের প্রতি নয়, বরং পুরো জাতির প্রতি একটি ঐতিহাসিক অবিচার। তাঁর মৃত্যু আজও ভারতীয় রাজনীতির এক অমীমাংসিত অধ্যায় হয়ে রয়ে গেছে।

লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর রহস্যময় মৃত্যুকে ঘিরে সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়ে বহু আলোচনা এবং ষড়যন্ত্র তত্ত্ব রয়েছে। তাশকন্দ চুক্তি স্বাক্ষরের ঠিক পরেই তাঁর আকস্মিক মৃত্যু আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও কূটনৈতিক সম্পর্কের জটিলতার দিকে ইঙ্গিত করে।

সোভিয়েত ইউনিয়নের ভূমিকার সম্ভাবনা

শাস্ত্রীর মৃত্যু তাশকন্দে ঘটে, যেখানে সোভিয়েত ইউনিয়ন এই শান্তি আলোচনা এবং চুক্তি আয়োজন করেছিল। সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং ভারত তৎকালীন সময়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিল। তবে, কিছু ষড়যন্ত্র তত্ত্ব সোভিয়েত ইউনিয়নের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।


সম্ভাব্য কারণ:

  1. তাশকন্দ চুক্তি সংক্রান্ত অসন্তোষ:
    চুক্তির শর্তগুলি নিয়ে শাস্ত্রী নিজে কতটা সন্তুষ্ট ছিলেন, তা স্পষ্ট নয়। ধারণা করা হয়, চুক্তির কোনও দিক নিয়ে তিনি হয়তো কিছু আপত্তি তুলতে পারতেন, যা সোভিয়েত কর্তৃপক্ষের স্বার্থের বিরুদ্ধে যেতে পারত।
  2. মৃত্যুর সময় সোভিয়েত নিয়ন্ত্রণ:
    শাস্ত্রীর মৃত্যুর পর সোভিয়েত কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি পরিস্থিতি সামাল দেয়। তাঁর দেহে ময়নাতদন্ত না করা এবং ঘটনার দ্রুত নিষ্পত্তি সোভিয়েতদের কার্যকলাপকে সন্দেহজনক করে তোলে।
  3. রাজনৈতিক চাপ:
    ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমানোর জন্য সোভিয়েত ইউনিয়ন চুক্তির আয়োজন করেছিল। শাস্ত্রীর মৃত্যুর মাধ্যমে এই প্রক্রিয়াকে সহজ করার সম্ভাবনাও কেউ কেউ উড়িয়ে দেয় না।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার সম্ভাবনা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেই সময়ে দক্ষিণ এশিয়ায় নিজেদের প্রভাব বিস্তার করার জন্য সক্রিয় ছিল। পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং ভারতের সঙ্গে কিছু জটিলতার কারণে শাস্ত্রীর মৃত্যুতে তাদের সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।
সম্ভাব্য কারণ:

  1. ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ:
    ১৯৬৫ সালের যুদ্ধের সময় আমেরিকা পাকিস্তানকে অস্ত্র সরবরাহ করেছিল। শাস্ত্রী ছিলেন একজন দৃঢ় প্রধানমন্ত্রী, যিনি জাতীয় স্বার্থে আপস করতে চাননি। এটি হয়তো মার্কিন কৌশলগত স্বার্থের বিরুদ্ধে ছিল।
  2. ভারতীয় পরমাণু কর্মসূচি:
    শাস্ত্রীর শাসনামলে ভারত তার পরমাণু কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিল। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অস্বস্তিকর ছিল। কিছু ষড়যন্ত্র তত্ত্ব দাবি করে, শাস্ত্রীর মৃত্যুর পেছনে এটি একটি কারণ হতে পারে।
  3. তাশকন্দ চুক্তির প্রভাব:
    মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাশকন্দ চুক্তিকে তাদের কৌশলগত স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ মনে করেছিল না। ফলে শাস্ত্রীর মৃত্যু মার্কিন প্রভাবের ফল হতে পারে বলে কেউ কেউ মনে করেন।

শাস্ত্রীর (Lal Bahadur Shastri) মৃত্যুর পেছনে সোভিয়েত ইউনিয়ন বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি জড়িত কিনা, তা প্রমাণ করা সম্ভব হয়নি। তবে ঘটনাপ্রবাহ এবং তৎকালীন ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তাঁদের ভূমিকা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ তৈরি করে।
তাঁর মৃত্যু ভারতীয় রাজনীতিতে একটি গভীর ক্ষত তৈরি করেছে এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতির অদৃশ্য চাপের সাক্ষী হয়ে রয়েছে। আজও এই প্রশ্নের উত্তর না পাওয়া ভারতীয় ইতিহাসের এক বড় শূন্যতা।

নেতাজি জীবিত থাকার তত্ত্ব

১৯৬৬ সালের জানুয়ারি মাসে লাল বাহাদুর শাস্ত্রী তাশকন্দে পাকিস্তানের সাথে শান্তি আলোচনার জন্য গিয়েছিলেন। সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যস্থতায় তাশকন্দ চুক্তি স্বাক্ষরের পরপরই তাঁর রহস্যজনক মৃত্যু ঘটে।

লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর (Lal Bahadur Shastri) মৃত্যুকে ঘিরে রহস্যের মধ্যে আরেকটি চমকপ্রদ তত্ত্ব রয়েছে—তাশকন্দে তাঁর নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর সঙ্গে গোপন সাক্ষাতের সম্ভাবনা। যদিও এই দাবি সরাসরি প্রমাণিত নয়, তবুও বহু ষড়যন্ত্র তত্ত্ব এবং গবেষকরা এই বিষয়ে আলোচনা করেছেন।

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর (Netaji Subhas Chandra Bose) ১৯৪৫ সালে তথাকথিত বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনাটি বহু ভারতীয় আজও প্রশ্নবিদ্ধ মনে করেন। অনেক গবেষক এবং ষড়যন্ত্র তত্ত্বের সমর্থক দাবি করেন, নেতাজি সম্ভবত সোভিয়েত ইউনিয়নে বন্দি অবস্থায় ছিলেন বা সেখানেই আত্মগোপন করেছিলেন।

কিছু সূত্রের দাবি, তাশকন্দে শাস্ত্রী এবং নেতাজির মধ্যে একটি গোপন সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
• ধারণা করা হয়, শাস্ত্রী হয়তো সোভিয়েত কর্তৃপক্ষের সহায়তায় নেতাজির সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেয়েছিলেন।
• সেই বৈঠকে ভারতের ভবিষ্যৎ এবং নেতাজির ফিরে আসার বিষয়ে আলোচনা হতে পারে বলে কেউ কেউ মনে করেন।

লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর (Lal Bahadur Shastri) তাশকন্দে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর সঙ্গে গোপন সাক্ষাতের তত্ত্ব এখনও প্রমাণিত নয়। এটি শুধু ইতিহাসের একটি রহস্যময় অধ্যায় এবং ভারতীয় রাজনীতির এক অমীমাংসিত প্রশ্ন। তবে এই তত্ত্বের সত্যতা যাচাই করার জন্য আরও গবেষণা এবং প্রমাণ প্রয়োজন। যতদিন পর্যন্ত এই প্রশ্নের উত্তর না মেলে, ততদিন এটি ভারতীয় ইতিহাসের অন্যতম আলোচ্য বিষয় হয়ে থাকবে।

জনগণের প্রশ্ন এখনও উত্তরহীন

লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর (Lal Bahadur Shastri) মৃত্যু আজও ভারতীয় জনগণের মনে এক গভীর প্রশ্নবোধক চিহ্ন। তাঁর মৃত্যু কি সত্যিই স্বাভাবিক ছিল, নাকি এর পেছনে ছিল গভীর ষড়যন্ত্র? এই রহস্য যতদিন না সমাধান হয়, ততদিন শাস্ত্রীর মৃত্যু আমাদের জাতীয় জীবনের এক কালো অধ্যায় হয়ে থাকবে।

লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর মৃত্যু নিয়ে সত্য উদ্ঘাটনের ক্ষেত্রে কংগ্রেস এবং বিজেপি উভয় সরকারই তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে।
• কংগ্রেস হয়তো দলের ভাবমূর্তি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক রক্ষার জন্য বিষয়টি এড়িয়ে গেছে।
• বিজেপি, যদিও প্রথম দিকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, পরে আর এই বিষয়ে বিশেষ মনোযোগ দেয়নি।
শাস্ত্রীর মৃত্যু ভারতের ইতিহাসের এক রহস্যময় অধ্যায় হয়ে রয়েছে। এটি শুধু একজন প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যু নয়, এটি ভারতের রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থার নৈতিকতার উপরও একটি বড় প্রশ্নচিহ্ন এঁকে দিয়েছে। জনগণের এই প্রশ্নের উত্তর না পাওয়া পর্যন্ত, এটি ভারতীয় ইতিহাসের একটি অন্ধকার অধ্যায় হিসেবেই থাকবে।